বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে

মোঃ সাইদুর রহমান সাধু

মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত ফিলিস্থিনীদের কাছে একটি আবেগ ও অনুভূতির নাম এবং তাঁর মৃত্যুর পরেও তিনি অমর ফিলিস্থিনীদের কাছে বেঁচে রয়েছেন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার নিমিত্তে। ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের শেষ নাগাদ
ইয়াসির আরাফাত ইসরাইলী সেনাবাহিনীর দ্বারা রামাল্লাায়
বন্দী হয়েই ছিলেন। তবে ২০০৪ সালের নভেম্বরের ১১ তারিখে প্যারিসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মস্তীস্কে রক্তক্ষরণ হয়ে তাঁর মৃত্যুু হয়েছিল বলে তাঁর চিকিৎসকগন পরিবারকে জানিয়েছিলেন।

১/১১ বাংলাদেশের চলামান রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি পরাজয়ের সূচনাময় যাত্রা। আর এই জাতিকে সেই পরাজয়ের হাত থেকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেন বেগম খালেদা জিয়া। শুধু প্রতিহতই করেননি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রে নিশ্চিত পরাজয় জেনেও তিনি দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা চলমান রাখতে ২০০৮ সালের পাঁতানো নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। ১/১১ সরকার তংকালীন বিরোধিদলীয় নেতা ও আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করলে বেগম খালেদা জিয়া তাঁর পক্ষ থেকে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিবাদও করেছিলেন।

আজকের প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পরে সকল মামলা থেকে অব্যহতি পেয়ে যান আর বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো চলমান রাখা হয়। একই সরকারের সময় চলমান মামলা থেকে নিজে অব্যহতি নিলে ও নিজের ক্ষমতা বলে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলোকে পরিচালিত করেন। যার প্রমান বিচারক মোতাহার সাহেব ও প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সাহেবের দেশ ত্যাগ ও তাপস সাহেবদের বক্তব্য। বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ধারাকে নির্বাসিত করতে ২০১৪ সালে বিনাভোটে ১৫৪ জন এমপিকে নির্বাচিত করেন এবং ২০০৮ সালে দেশের তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজা প্রদান করে। বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কারাবরণ করেন।দেশে করোনা মহামারি দেখা দিলে সরকার তাকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিলেও বর্তমানে তিনি বন্দিত্ব জীবন যাপন করছেন।

বেগম খালেদা জিয়া বাসায় থাকাকালীন সময়ে তিনি বারে বারে অসুস্থ হয়ে পড়েন।একাধিক বার তিনি দীর্ঘ মেয়াদে বিশেষঙ্গ ডাক্তারদের তত্বাবধায়নে চিকিৎসা নেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার শরীরে কিডনি, লিভার, কার্ডিয়লোজি সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ায় এবং বয়সের কারনে মেডিক্যাল বোর্ড উন্নতি চিকিৎসার জন্য
মতামত প্রদান করেন। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার ট্রানসিপমেন্ট খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে তাঁর পরিবার একাধিকবার সরকারের নিকট আবেদন করার পরেও কোনো ধরণের মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এক্ষেত্রে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে যা গুরুতর অপরাধ।

দেশ এবং দেশের বাহিরে এমন অনেক নজির রয়েছে যে একজন সাজা প্রাপ্ত আসামিকেও চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে পাঠানো হয়েছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আসম আব্দুর রব সাহেবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানি পাঠিয়েছিলেন।এই সরকার হাজি সেলিম ও মোফাজ্জল হোসেন মায়াকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠিয়েছিলেন । এমনকি এই সরকার সাবেক সেনা প্রধান আজিজ সাহেবের ভাইকেও সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার পরেও আইনের তোয়াক্কা না করে বিদেশে পাঠিয়েছেন। পাকিস্থানের নওয়াজ শরিফকে কারান্তরীন অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নিউজিল্যান্ডে পাঠিয়েছিলেন পাকিস্থান সরকার। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার কতটা অমানবিক তা প্রমাণিত হয় লেখক মুশতাক, জননেতা নাসির উদ্দীন পিন্টু ও মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর কাস্টরিয়াল ডেথ এর মাধ্যমে; যা এখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিস্কার। আসলে বর্ত মান সরকার প্রধান চাইছেন বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় অসুস্থতার নামে হত্যা করতে; যার প্রমান সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে প্রমানিত। অনেকেই এই ধারণা রাখেন যে শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা সবসময়ই করে আসছেন। ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পরে ফিলিস্থিনীদের যেমন বক্তব্য ছিল যে ইসরাইল ইয়াসির আরাফাত কে হত্যা করেছে ঠিক তেমনি বাংলাদেশের মানুষও একসময় বলবে খালেদা জিয়ার হত্যার জন্য দায়ী শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রায় নয় বছর পরে ইয়াসির আরাফাতের স্ত্রীর আবেদনের কারনে কবর থেকে দেহাবশেষ উত্তোলন করা হয়। ইয়াসির আরাফাতের দেহাবশেষ ও ব্যবহৃত জিনিসের
উপর ৬০টি নমুনা নিয়ে পরিক্ষায় রিপোর্টে ইয়াসির আরাফাতের শরীরে স্বাভাবিকের চেয় ১৮ গুন উচ্চমাত্রার পলোনিয়ামের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যদিও সেই জল্পনার অবসান এখন নতুন দিকে মোড় নিয়েছে যা এখনও শেষ হয়নি।

ইয়াসির আরাফাত ইসরায়েলীদের দ্বারা দুই বছর গৃহবন্দি ছিলেন কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া কিন্তু এই সরকারের জেলখানায় বন্দী ছিলেন ২ বছরের বেশী সময় । আজ সরকার বা শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে বরং যেভাবে তাঁর জীবন নিয়ে উপহাস করছেন, তাতে মনে হয় সরকার এবং সরকার প্রধান নিজেই ইয়াসির আরাফাতের মতো বেগম খালেদা জিয়াকে নিরবে হত্যার কোন পরিকল্পনা করেই ফেলেছে। আর এ কারনেই সরকার চায়না বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার কোন সুযোগ
পাক। যদি না পরীক্ষা নীরিক্ষা শেষে প্তরমাণ হয়ে যায় যে তাকে জেলখানায় স্লো-পয়জন দেয়া হয়েছিলো। একথা স্পষ্টত যে বর্তমান সরকার প্রধান দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে লুন্ঠিত করে গণতন্ত্রের নামে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করার জন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে নিরবে হত্যার সকল পরিকল্পনা করেই বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করছেন। আর একারনেই সরকার কালক্ষেপণ করছে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করতে। যদি গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালদা জিয়া’র কোন অনাকাঙ্খিত পরিণতি হয় তবে তার দায় শেখ হাসিনাকেই বহন করতে হবে।

Recent Posts