আমার জিয়া, আমাদের জিয়া

ইঞ্জিঃ শামিম রাব্বি সঞ্চয়

এক.

১৯৮১ সাল। নতুন বছর। আমার নতুন ক্লাস। আমার স্কুলের নাম, ‘ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া’। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তখন সারা বিশ্বে জীবন্ত কিংবদন্তী ! আর সারা বাংলাদেশের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত আপামর জনতা তাঁর ফ্যান ! তাই কেউ যখন আমাকে আমার স্কুলের নাম জিজ্ঞেস করত, গর্বে বুক ফুলিয়ে তাকে স্কুলের নামের সাথে প্রতিষ্ঠাতার নামটাও শুনিয়ে দিতাম।
একদিন স্কুলে গিয়ে শুনলাম যে, প্রেসিডেন্ট জিয়া আামাদের স্কুলে আসবেন। আমি তখন খুব ছোট। মাত্র ক্লাস থ্রী-তে পড়ি। তাই প্রেসিডেন্ট আসার গুরুত্ব প্রথমে বুঝতেই পারিনি। একদিন সকালে স্কুলে যেতেই, ক্লাস টিচার সব ছাত্র-ছাত্রীদের লাইন করিয়ে নিয়ে গেলেন হেলিপ্যাড সংলগ্ন রাস্তায়। হেলিপ্যাডটা ছিল আমাদের স্কুলের ঠিক সামনেই। শুনলাম আজই নাকি প্রেসিডেন্ট আসবেন। দেখলাম হেলিপ্যাডের মাঝখানে বিশাল একটি ট্যাংক আনা হয়েছে। এই ট্যাংকটি এখনও বগুড়ার মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্টের ‘11 Infantry Division’-এর ঢাকা-বগুড়া হাইওয়ে সংলগ্ন মূল গেটে, মঞ্চের উপর রাখা আছে। আমরা সব ছোট ছোট বাচ্চারা, হেলিপ্যাড সংলগ্ন রাস্তার ধারে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে, সুশৃঙ্খলভাবে অপেক্ষা করতে থাকলাম।
কিছুক্ষণ পর আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে একটি হেলিকপ্টার এসে হেলিপ্যাডে নামল। ভেতর থেকে নেমে এলেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ! আমরা তখনও দূর থেকে স্পষ্ট কিছুই দেখতে পারছিলাম না। তবে সবই বুঝতে পারছিলাম। কিছুক্ষণ পর সেই ট্যাংক থেকে শুরু হল বোমা বর্ষণ ! একের পর এক, লাগাতার, মুহুর্মুহু ! আমরা সবাই অবাক হয়ে দেখছিলাম। হচ্ছেটা কি ? আরও অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে, ট্যাংক থেকে বোমা বর্ষণ হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কোথাও কোনও ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে না ! ট্যাংকের নল দিয়ে শুধু ধোঁয়া বের হচ্ছে। পরে জেনেছিলাম যে, ওগুলো নাকি ছিল ডামি বোমা। শুধু শব্দই হয়, ক্ষতি হয় না। আর মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণটা নাকি ছিল ‘গার্ড অব অনার’। প্রেসিডেন্টকে সম্মান জানানোর জন্য।
যাহোক, ট্যাংকের বোমা বর্ষণ এক সময় শেষ হলো। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হেলিপ্যাড থেকে ধীর পায়ে বেরিয়ে এলেন। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাচ্চাদের সাথে হ্যান্ডশেক করতে করতে এগিয়ে চললেন। আমিও অধীর আগ্রহে দাঁড়িয়ে আছি। একসময় তিনি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। আমিও প্রেসিডেন্টকে সালাম দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম। আমার ছোট্ট হাতখানি নিজ হাতে নিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়া আমার সাথেও গভীর এক আন্তরিকতায় হ্যান্ডশেক করলেন। জিজ্ঞেস করলেন আমার নাম ও ক্লাস। আমি উত্তর দিলাম। তিনি আমার কাঁধটা একটু ঝাঁকিয়ে দিয়ে বললেন, “গুড ! মন দিয়ে লেখাপড়া করবে।” জিয়াউর রহমানের সেদিনের হাতের সেই স্পর্শ ও কন্ঠের মধ্যে কি স্পেশাল কিছু একটা ছিল ? হৃদয়স্পর্শী ! অনুপ্রেরণামূলক ? কালজয়ী ? আমি আজও ভাবি ! ভাবলেই বারবার শিহরিত হই !
এর কিছুদিন পরের ঘটনা। একদিন সকালে স্কুলের প্রথম ক্লাসেই ক্লাস টিচার এসে বললেন,“দুবৃত্তরা গতরাতে চট্টগ্রামে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবকে মেরে ফেলেছে। তাঁর মৃতদেহও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না !” স্কুলের সবাই বজ্রাহত হয়ে পড়ল ! সাথে সাথে স্কুল ছুটি দিয়ে দিল। আমি কেবলই ভাবতে থাকলাম, কিছুদিন আগে এই মানুষটাই কত না ভালবাসা ও আন্তরিকতা নিয়ে আমাদের স্কুল ভিজিট করে গেলেন। আমরাও তাঁকে অকৃত্রিম ভালবাসা ও কতই না সম্মান জানালাম। হঠাৎ করেই সেই মানুষটা নাই হয়ে গেল ! আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। কিন্তু, টিভিতে বারবার দেখছিলাম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় সারাদিন হামদ-নাত ও দোয়া প্রচার করা হচ্ছে। তখনকার একমাত্র চ্যানেল ছিল বিটিভি। সেই সময়টা অনেকদিন আমার একটা মানসিক ট্রমার মধ্যে কেটেছিল। কিছুদিন পর বইএর দোকানে একটা পোস্টার দেখলাম। সাদা কাগজের উপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কালো রং-এর ছবি। ছবির বুক থেকে লাল টকটকে রক্ত ঝরছে। টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে আমি পাঁচ টাকা দিয়ে পোস্টারটি কিনেছিলাম। গভীর ভালোবাসায় ‘আমার জিয়া’র স্মৃতি আমি সবসময় রাখতাম আমার স্কুল ব্যাগে।
এটাই হলো আমার জিয়া। যার কয়েক মুহূর্তের সেই স্পর্শ ও ছোট্ট একটি উপদেশ আজো আমাকে শিহরিত করে। আমার চেতনাকে নাড়া দেয়। উজ্জীবিত করে। যা শুধুই আমার।

দুই.

আমি এইচ.এস.সি. পর্যন্ত ‘ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া’-তেই ছিলাম। আমাদের স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাস ছিল সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত এবং ওয়েল ডিসিপ্লিন্ড। তাই এইচ.এস.সি. পর্যন্ত আমিও ছিলাম সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত। শুধুই লেখাপড়া ও ডিসিপ্লিনই শিখেছি।
এইচ.এস.সি. পাশ করলাম ১৯৯১ সালে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য দেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে ঘুরতে লাগলাম। এই প্রথম বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরছি। খুবই উৎফুল্ল ও পুলকিত ছিলাম। এক সময় আবিষ্কার করলাম, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শুধু আমার একার নন ! সারা বাংলাদেশের কোটি কোটি আপামর জনতা জিয়াকে অন্তরে ধারণ ও লালন করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ক্যাম্পাসের দেয়ালগুলি জিয়াউর রহমানের স্লোগানে স্লোগানে আলোকিত –
“টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, সবাই বলে জিয়া জিয়া”
“এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে”
“কে বলে রে জিয়া নাই ? জিয়া মোদের চেতনায়”
“ জিয়া তুমি আছো মিশে, লক্ষ কোটি ধানের শীষে” …….. ইত্যাদি, ইত্যাদি।

অবশেষে, ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হলাম। রাজশাহী বি.আই.টি.-তে (বর্তমানে রুয়েট)। ক্লাস শুরু হলো। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ফর্ম পূরণ করে নাম লেখালাম ছাত্রদলে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশুনার পাশাপাশি শুরু হলো আমার রাজনৈতিক শিক্ষা। আমি খুব সতর্কতার সাথে, উৎসুক মনে, সন্তর্পণে, ধীরে ধীরে এগুতে থাকলাম ছাত্রদের রাজনীতিতে। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই ছাত্রলীগ রাজশাহী বি.আই.টি’র লেঃ সেলিম হলে আমার রুম ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দিল। এরপর আমার ছাত্ররাজনীতির গতি বেড়ে গেল বহুগুণ।

ঢাকা বুয়েটের তৎকালীন ভি.সি. অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান স্যারের কাছে গল্প শুনেছিলাম। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ, কালোরাতের গল্প ঃ
হঠাৎ করেই ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করে। দেশের নিরীহ ঘুমন্ত সাধারণ মানুষ প্রথমে বুঝতেই পারেনি দেশে কি ঘটছে ! তাদের করণীয় কি ? তাদের বর্তমান কি ? তাদের ভবিষ্যতই বা কি ? কেউ জানে না !!! রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষ থেকে কোনো সুুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনাও নেই। ঢাকা ইউনিভার্সিটি ও আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমানে বুয়েট), পাশাপাশি ক্যাম্পাস দুটোর ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতেও চলে পাক বাহিনীর তান্ডব। সব্বাই তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় ! সঠিক করণীয় বুঝতে না পেরে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ও আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সমস্ত শিক্ষকগণ এক হয়ে, নিজেদেরকে কয়েকটি টীমে ভাগ করে নেন। ছাত্র-ছাত্রী ও সমস্ত শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যগণকে বাঁচানোর জন্য শিক্ষকগণের এই টীমগুলি সময় ভাগ করে, পালাক্রমে ক্যাম্পাস পাহারা দিতে থাকেন। এভাবে আতংক, অনিশ্চয়তা ও উৎকন্ঠার মধ্যেই সময় কাটতে থাকল পূর্ব-বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের। পাক বাহিনীর অতিবিভৎষ গণহত্যার মধ্যে দিয়ে কাটল ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের কালো রাত, ২৬ মার্চ সারাদিন ও রাতের মধ্যভাগ পর্যন্ত।
অতঃপর ২৬ মার্চ দিবাগত গভীর রাতে মেজর জিয়ার কন্ঠে রেডিওতে ভেসে এলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার অমোঘ ঘোষণা। তখন সবাই বুঝতে পারল, দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। নিজেদেরকে বাঁচাতে হবে এবং পাকবাহিনীর সাথে লড়তে হবে। তৎক্ষণাৎ সবাই যার যার মতো করে যুদ্ধ শুরু করে দিল। শুরু হল বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার যুদ্ধ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।
বাস্তবে, মেজর জিয়ার সেই স্বাধীনতার ঘোষণার সাথেই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ। তাই পরবর্তীতে টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের গবেষণালব্ধ একটি প্রতিবেদন ছেপেছিল। যার শিরোনাম ছিল,“জিয়ার ঘোষণাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের তূর্যধ্বনী।”

তিন.

গয়েশ্বরদা’র (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বি.এন.পি. স্থায়ী কমিটির সদস্য) মুখে জিয়াউর রহমানের একটি গল্প শুনেছিলাম। জিয়াউর রহমান যখন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন প্রতি ঈদে বি.এন.পি’র সকল শ্রেণীর নেতারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে গিয়ে কুশলাদী বিনিময় করতেন। প্রেসিডেন্টের সাথে ঈদের দিন সবাই মন খুলে কথা বলতেন, আড্ডা দিতেন। এমনই এক ঈদের আড্ডায়, গয়েশ্বরদা উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বাসভবনে। গয়েশ্বরদা’র ভাষায় তিনি নিজে তখন “পাতিনেতা”। অর্থাৎ তিনি বয়সে তখন ছিলেন যুবক। তাই নেতা হিসেবে ছিলেন জুনিয়র নেতা।
ঈদের দিনের সেই আড্ডায় বি.এন.পি’র কম বয়সী জুনিয়র নেতারা প্রেসিডেন্ট জিয়ার কাছে আবেদন করলেন,“স্যার, আমাদের সবারই তো বয়স বাড়ছে। অনেকেই বিয়ে সাদী করে সংসার শুরু করেছি। ধীরে ধীরে আমাদের কাঁধে দায় দায়িত্বও বাড়ছে। স্যার, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা করে দেন।”
প্রেসিডেন্ট জিয়া তাঁদের কথা মন দিয়ে শুনলেন। এরপর তিনি (জিয়া) বলা শুরু করলেন, “দেখো আমিও মাঝে মাঝে একথাটা ভাবি। আমারও তো সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান আছে। আমি তো আর সারা জীবন প্রেসিডেন্ট থাকবো না। আমি যখন প্রেসিডেন্ট থাকবো না, তখন আমার স্ত্রী-সন্তানদের কি হবে ? তাদের ভবিষ্যৎ কি ? আমি তো আমার স্ত্রী-সন্তানদের জন্য আালাদাভাবে কিছুই করছি না !”
এরপর প্রেসিডেন্ট জিয়া নিজেই নিজের প্রশ্নের উত্তর দিলেন,“আমি বাংলাদেশের আট কোটি মানুষের জন্য কাজ করছি। আমি চাই দেশের সব মানুষের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। আমি যদি বাংলাদেশের আট কোটি মানুষের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারি, তবে আমার স্ত্রী-সন্তানরা তাদের ভাগটাও ঠিক পেয়ে যাবে। কারণ, আমার স্ত্রী-সন্তানরাও তো এই আট কোটি মানুষেরই অংশ। তাদের ভবিষ্যতের পাথেয় বাংলাদেশের আট কোটি মানুষের ভবিষ্যতের সাথেই যুক্ত আছে। তাই আমি আমার পরিবারের ভবিষ্যতের জন্য আলাদাভাবে কিছুই করি না।”

চার.

জিয়াউর রহমান আমলের খুব বেশী স্মৃতি আমার মনে নেই। শুধু মনে আছে যে, জিয়া গেঞ্জি পড়ে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ঘুড়ে বেড়াতেন। নিজ হাতে কোদাল নিয়ে খাল কাটতেন। মাঝে মাঝে টিভিতে দেখতাম।
আর মধুর স্মৃতি হয়ে আছে, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে আমার কয়েক মুহূর্তের হ্যান্ডশেক। সারা জীবনের পাথেয় হয়ে আছে, আমার প্রতি জিয়ার সেই ছোট্ট উপদেশ।
শহীদ জিয়ার সেই স্পর্শ খুঁজে পেতে, আমি মাঝে মাঝে ছুটে যাই, বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নের ‘বাগবাড়ী’ গ্রামটিতে। যেখানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জন্মগ্রহণ করেছিলেন ও তাাঁর ছেলেবেলা কেটেছে। সেই বাড়ীটার নাম এখন “জিয়াবাড়ী”। এই জিয়াবাড়ীতেই জিয়া জন্মগ্রহণ করেন ও শৈশব কাটান। এই বাড়ীর পুকুরেই তিনি সাঁতার শিখেছেন।
বাগবাড়ী গ্রামটিতে পরবর্তীতে স্থাপিত হয়েছে ‘শহীদ জিয়া রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’। যেখানে গ্রামের গর্ভবতী ও প্রসূতী মহিলারা অতি স্বল্পমূল্যে সহজে মানসম্মত চিকিৎসা পেয়ে থাকেন। গ্রামের সাধারণ মানুষের জন্য আছে ‘শহীদ জিয়াউর রহমান গ্রাম হাসপাতাল’। যেখানে গ্রামের সবাই হাতের কাছেই শহরের ভালো চিকিৎসকগণের পরামর্শ সহজে নিয়মিত পেয়ে থাকেন। গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার জন্য গড়ে উঠেছে,‘শহীদ জিয়া মহাবিদ্যালয়’ ও ‘শহীদ জিয়া ডিগ্রী কলেজ’। আর আছে ‘জিয়া মঞ্চ’- যেখান থেকে আমি উদ্দীপ্ত হয়ে ফিরে আসি সবার মাঝে। আমার হাতে লেগে থাকা শহীদ জিয়ার স্পর্শ ও আমার কানে বাজতে থাকা শহীদ জিয়ার ছোট্ট উপদেশটি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে।
শহীদ জিয়া বাংলাদেশের ভবিষ্যতের এমন অনেক ছোট ছোট দায়িত্ব দিয়ে গেছেন বাংলাদেশের লক্ষ-কোটি জনতাকে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের অতি সাধারণ মানুষেরা সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। তাই তো বাংলাদেশের মানুষ বারবার স্বৈরাচারকে পরাজিত করে। আর বাংলাদেশে বারবার সামনে থেকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আপোষহীণভাবে নের্তৃত্ব দেয় শহীদ জিয়ার গড়া দল। সমুন্নত রাখে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও সুন্দর ভবিষ্যতের পাণে অগ্রযাত্রা।

Recent Posts