মেজর জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষনা

এমাজউদ্দিন আহমেদ

ক’দিন আগে সংবাদপত্রের পাতায় দেখলাম হাইকোটের ত্রক বেঞ্চে থেকে অনুরোধ করা হয়েছে জিয়াউর রহমানের ফাইল থেকে জানতে চান মেজর জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন কি না এবং দিয়ে থাকলে কখন কোন দিন, কোথা থেকে। হয়তো কয়েক দিনের মধ্যে সেই ফাইলটি বিচারকদের নিকট উপস্থাপিত হয়েও যাবে। মাননীয় হাইকোর্টের পক্ষ থেকে তারপর সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন কি না, কেননা এ বিষয়ে হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত দেবার ক্ষমতা রযেছে। তারপরেও কিছু প্রশ্ন থাকে; যে বিধি-বিধান ও আইনের বলে বিচারকগন এই ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন তার ভিত্তি কী? স্বাধীনতা লাভের মতো ঐতিহাসিক অর্জনে কোন বিচারালয় কী কোন ভূমিকা রেখেছেন? স্বাধীনতার ঘোষনার মতো ঐতিহাসিক পদক্ষেপের কাহিনী কি কোন প্রেসিডেন্টের ফাইলে থাকে? আর থেকে থাকলেও কোন বিচারক কোন মানসিকতায় প্রেসিডেন্টের ফাইল ঘাঁটার মতো অবিমৃশ্যকারিতা প্রদর্শন করতে পারেন। আমার বা তাদের মতো চাকরির জন্য কি জিয়াউর রহমানের bio-data রয়েছে সেই ফাইলে? দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই দেশের সংবিধান প্রণীত হয়েছে এবং সংবিধান প্রাপ্ত ক্ষমতা বলেই বিচারকদের এই ক্ষমতা। দেশ স্বাধীন করার ক্ষেত্রে যাদের ভূমিকা তুলনাহীন, বিশেষ করে জিয়াউর রহমানের মত শ্রেষ্ঠ মুক্তিযুদ্ধার, তাঁর ফাইল পরীক্ষা করা আইনত সিদ্ধ হতে পারে, কিন্তু জাতীয় বিবেকের কিঞ্চিৎ অধিকার হলে যে কেউ এমন পদক্ষেপ গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন। ভাগ্য ভালো, বাংলদেশের স্থপতি শেখ মুজিবর রহমানের ফাইল নিয়ে এখনো টানাটানি শুরু হয়নি। জিয়াউর রহমানের ফাইলে কি আছে আমি জানি না। এ সম্পর্কে কিছু জানারও কোন আগ্রহ আমার নেই। তবে জিয়াউর রহমানের সহযোগী ও সহকর্মীরা কে কি বলেছেন তা আমি জানি। জানি তাদেরই বই পুস্তক থেকে।
মেজর রফিক-উল ইসলাম, বীর মুক্তিযুদ্ধের এক নম্বও সেক্টরের কমান্ডার (১১ জুন থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১) তার লেখা ‘ÔA Tale of millions MÖ‡š’i 105-106  পৃষ্ঠায় লিখেছেন; ২৭ মার্চের বিকালে তিনি (মেজর জিয়া) আসেন মদনাঘাটে এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ঘোষনা দান করেন। প্রথমে তিনি নিজেকে রাষ্টপ্রধান রূপে ঘোষনা করেন। পরে তিনি শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছেন।। কেন তিনি মত পরিবতন করেন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মেজর রফিক-উল ইসলাম। একজন সামরিক কর্মকর্তা নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান রূপে ঘোষণা দিলে এই আন্দোলনের রাজনৈতিক চরিত্র (Political Character of the movement) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই আশংকায় দেশপ্রেমিক মেজর জিয়া শেখ মুজিবরের নামে ঘোষণা দিলেন। তা শ্রুত হয় ২৮ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পযর্ন্ত (Rafiq-ul-Islam, A Tale of millions,Dhaka,BBI 1981)। মেজর রফিক বর্তমানে জাতীয় সংসদের একজন নির্বাচিত সদস্য। এর পূর্বে ১৯৯৬-২০০১ সময়কালে র্দীঘদিন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রূপে দায়িত্ব পালন করেন। ৩ নম্বও সেক্টরের কমান্ডার মেজর কে এম সফিউল্লাহ,বীর উত্তম, তার গ্রন্থে ‘Bangladesh At War’ (Dhaka Academic Publishers,1989) পৃষ্ঠায় যা লিখেছেন, তা উল্লেখযোগ্য। তিনি লিখেছেন, মেজর জিয়া ২৫ মার্চে রাত্রিতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সদলবলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন, তাঁর কমান্ডিং অফিসার জানজুয়া ও অন্যদর প্রথমে গ্রেফতার এবং পরে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। পরে ২৬ মার্চে তিনি স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মোকাবিলায় জন্য সকলকে আহবান করেন। এ ঘোষণায় তিনি নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান রূপে ঘোষনা করেন। ২৭ মার্চ মেজর জিয়া স্বাধীন বেতার কেন্দ্র থেকে আরেকটি ঘোষনায় বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক রূপে আমি মেজর জিয়া শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেছি (I Major Zia,Provisonal Commander-in-Chief of the Bangladesh Liberation Army,hereby proclaim,on behalf of Sheik Mujibur Rahman,the Independence of Bangladesh)।

তিনি আরো বলেন,আমরা রিড়াল-কুকুরের মতো মরবো না, বরং বাংলা মায়ের যোগ্য সন্তানরূপে (স্বাধীনতা জন্যে) প্রাণ দেব। ইষ্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস এবং সমগ্র পুলিশ বাহিনী চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, বরিশাল, খুলনায় অবস্থিত পশ্চিম পাকিস্তানী সৈনিকদের ঘিরে ফেলেছেন। ভয়ংকর যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। মেজর সফিউল্লাহ অভিব্যক্তি উল্লেখযোগ্য। তার মতে, এ ঘোষণা দেশে এবং বিদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উদ্দীপ্ত করে। যারা ব্যক্তিগত ও বিচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধে রত ছিলেন এ ঘোষণা তাদের নৈতিক বল ও সাহসকে বহু গুন বাড়িয়ে দেয়। অন্যরাও এ যুদ্ধে শামিল হন। মেজর জেনারেল (অব.) সুবেদ আলী ভূইয়া তার লিখিত ’মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস’ গ্রন্থের ৪৩-৪৪ পৃষ্ঠায় (ঢাকা,আহমদ পাবলিশিং হাউস,১৯৭২) লিখেছেন, মেজর জিয়াকে ২৭ মার্চের সন্ধ্যায় দেখে উৎসাহ-উদ্দীপনায় ফেটে পড়ল বেতার কেন্দ্রের কর্মীরা। ঘন্টা দেড়েক চেষ্টার পর তিনি তাঁর সেই ঐতিহাসিক ভাষণে নিজেকে ‘হেড অব দ্য ষ্টেট’ অর্থাৎ রাষ্ট্রপ্রধান রূপেই ঘোষনা করেছিলেন। কিন্তু তার পরের দিন পুর্বের দেয়া বেতার ভাষণটির। সংশোধন করে তিনি ঘোষণা দেন যে, এই মুক্তিযুদ্ধ তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন মহান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে। মেজর জেনারেল সুবেদ আলী ভূইয়া একজন কৃতী মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে তিনি অওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করে জাতীয় সংসদের সদ্যস নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মেজর জিয়ার সেই বক্তৃতা শুনে নিজের প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন করে বলেন, ‘ মেজর জিয়ার ঐ উদ্দীপনাময় নেতৃত্ব আমাকে সংগ্রামের কাজে আরো উদ্ধুদ্ধ করে তোলে। তখন থেকেই তার নির্দেশে আমি কাজ করে যাই।’
কর্নেল অলি আহমদ, বীর বিক্রম,অক্সফোর্ড ব্রুকস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি অভিসন্দর্ভের অনুবাদ গ্রন্থে-(রাষ্ট্র বিপ্লব:সাময়িক বাহিনীর সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ ঢাকা, অন্বেষণা প্রকাশন ২০০৮) আরো সুষ্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘ মেজর জিয়া ২৭ মার্চ ১৯৭১ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। মেজর জিয়া ছিলেন আমাদেও নেতা এবং বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি(মুখবন্ধ)। অলি আহমদ তখন ছিলেন একজন ক্যাপ্টেন। সেই ঐতিহাসিক ঘোষণার সময় তিনি মেজর জিয়ার সাথেই ছিলেন। কর্নেল অলি আহমদ তার অভিসন্দভ রচনার জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহন করেন ৮ জন শীর্ষ পর্যায়ের সাময়িক কমকর্তার। তাদের সকলেই বলেছেন,১৯৭১ সালের ২৭ মার্চে জিয়াউর রহমান প্রদত্ত স্বাধীনতার ঘোষণা তারা শুনেছেন। সেক্টর নম্বর ৫- এর কমান্ডার তৎকালীন মেজর এবং পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মীর শওকত আলী,বীর উত্তম বলেন, ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডার জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ ঘোষণা করলে এবং পরে স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দিলে আমি সানন্দে যুদ্ধে যোগদান করি (পৃষ্ঠা ১৬৬,১৬৭,১৭১)। ১১নং সেক্টরের কমান্ডার (১৫ নভেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম হামিদুল্লাহ খান লেখকের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন,১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে মেজর জিয়ার সদলবলে বিদ্রোহ এবং ২৭ মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা স্বাধীন বাংলাদেশের গতিপথ নির্ধারণ করে দেয়। এতোক্ষন পর্যন্ত বাংলাদেশের সাময়িক কমকর্তাদের বক্তব্য তুলে ধরলাম এজন্য যে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে থেকে ১০ এপিল পর্যন্ত তারাই ছিলেন যুদ্ধেক্ষেত্রে। ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার সনদ রচনা এবং ১৭ এপ্রিলে মুজিবনগরে প্রবাসী সরকার গঠিত হলে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধে নাম ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তখন থেকে সাময়িক কমকর্তাবৃন্দও বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থেকে এবং তাদের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। তারাই কিন্তু দীঘ তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশের সামরিক কমকর্তা কেন?
বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতের সাময়িক কমকর্তাদের ভাবনা-চিন্তাও ছিল এমনই। তারাও একপর্যায়ে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ও বাংলার দামাল ছেলেদের সঙ্গে কাধেঁ কাধঁ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছেন এবং বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন।এমনি একজন সুখবন্ত সিং।মেজর জেনারেল হিসাবে তিনি অবসর গ্রহন করেন। তার The Liberation of Bangladesh, Vol.I (Delhi:Lancer Publishers, 1980 ) গ্রন্থের ৯ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন, ইতোমধ্যে ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার থেকে একজন বাঙালি অফিসার মেজর জিয়ার কন্ঠসর ভেসে আসে। তিনি আরো লিখেন, এই ঘোষণার মাধ্যমে বাঙালি সেনা অফিসারগন রাজনৈতিক নেতাদের অসন্তুষ্ট করতে চাননি। অন্যদিকে ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে জাতিকে দিক নির্দেশনা দেবার আবশ্যকতা ছিল। শুধু তিনি কেন ১৯৭৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর ভারতের রাষ্ট্রপতি নীলম সঞ্জীব রেড্ডি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সম্মানে আয়োজিত এক ভোজন সভায় তার প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে যে বক্তব্য প্রদান করেন, তাও উল্লেখযোগ্য। রাষ্ট্রপতি রেড্ডি বলেন, ইতোমধ্যে আপনার দেশের ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণাকারী ও সাহসী মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আপনার সমুজ্জ্বল অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গেছে। (মুহাম্মদ সামসুল হক, [Bangladesh in International Politics Dhaka,UPL,1993,P-96] সব মিলিয়ে যা বলতে চাই তা হচ্ছে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এ জাতির ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায় এবং মুক্তিযোদ্ধারা হলেন এ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। নিছক রাজনৈতিক কারনে মুক্তিযোদ্ধো জিয়াউর রহমানের অবমূল্যায়ন কোনোক্রমে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। জিয়াউর রহমান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সৈনিক। স্বাধীনতা ঘোষণার সময় যে পতাকা তার সামনে ছিল, তা বাংলাদেশের পতাকা।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে শুরু করে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত জিয়াই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের নায়ক। ১৭ এপ্রিল এই দায়িত্ব অর্পিত হয় বাংলাদেশের আর এক সূর্যসন্তান আতাউল গণি ওসমানীর উপর। ১৯ এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এক ভাষণে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বলেন, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলের সমর আক্রমণের মুখে চট্টগ্রাম শহওে যে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে এবং আমাদের মুক্তিবাহিনী ও বীর চট্রলার ভাইবোনেরা যে সাহসিকতার সাথে শত্রুর মোকাবিলা করেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই প্রতিরোধ স্ট্যালিনগার্ডের পাশে স্থান পাবে। যারা ২৬ মার্চে জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার কথা বলেন তা তাদের বক্তব্য। আমার দীর্ঘকালীন গবেষণায় এই সত্য সুস্পষ্ট যে, তিনি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চের সন্ধায় নিজেকে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তার নিজের কন্ঠে ঘোষিত তার কথা অন্য অনেকের মতো আমি নিজেও শুনেছি। তাই বলবো, এই বিষয়ে বিতর্ক কম হয় ততই মঙ্গল এবং যার যা প্রাপ্য তা তাকে দেয়াই সঙ্গত। ইতিহাস নিজস্ব গতিতে চলে। কারো নির্দেশে সে গতিপথ পরিবর্তিত হয়না।
(তথ্য সুত্রঃ দৈনিক দিনকাল,৩০ মে ২০০৯)

Recent Posts